ঢাকা, ৩০ জানুয়ারি- একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বুধবার জাতীয় সংসদে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা ছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবনির্বাচিত স্পিকারকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আশা করি এই সংসদও কার্যকর হবে। প্রাণবন্ত হবে। মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রে পরিণত হবে বর্তমান সংসদ। তিনি এ সময় বিরোধীদলের সদস্যদেরও অভিনন্দন জানান। শেখ হাসিনা বলেন, গণতান্ত্রিক ধারায় সমালোচনা সব সময় গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিরোধী দলের সদস্যদের আশ্বাস দিতে পারি যে তারা তাদের সমালোচনা যথাযথভাবে করতে পারবেন। এখানে আমরা কোনো বাধা সৃষ্টি করব না। কোনোদিন বাধা আমরা দেইনি, দেবও না। শেখ হাসিনা আরও বলেন, অনেক ঘাত-প্রতিঘাত, অনেক চড়াই-উতড়াই পার হয়ে আমরা একটা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি। কারণ এবারের নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ, মা বোনেরা, প্রথম যারা ভোটার তারা, তরুণ ভোটাররা সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। একটি সফল নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই সংসদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এবং কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি বলেন, সংসদ নেতা হিসেবে আমার দায়িত্ব সংসদের সকল সদস্যের অধিকার যেমন দেখা এবং সেই সঙ্গে আপনি স্পিকার হিসেবে সব সদস্য যাতে সমানভাবে সুযোগ পায়, এখানে সরকারি দল, বিরোধী দল সবাই যেন সমান সুযোগ পায় অবশ্যই আপনি সেটা দেখবেন। এ ব্যাপারে আমরা আপনাকে সব রকম সহযোগিতা করব। সংসদ নেতা বলেন, গণতন্ত্রই একটি দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আর তা আজ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রমাণিত সত্য। আজ আমরা আর্থসামাজিকভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছি। এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বাংলাদেশের জনগণকে একটি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে স্বপ্ন, যে স্বপ্ন নিয়ে তিনি এ দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, সেই ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা আমরা ইনশাআল্লাহ গড়ে তুলব। এটাই আমাদের লক্ষ্য। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যেহেতু ভোট দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচিত করে এবং আমরা যারা প্রতিনিধিরা বসেছি, সবাই কিন্তু জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছি। জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে এখানে আমরা আমাদের স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করব। তিনি বলেন, আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে আমাদের ভোটাররা, যারা নির্বাচিত করে এখানে পাঠিয়েছে, তাদের সার্বিক উন্নয়ন, তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং দেশে দেশে যেন একটা শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করে তা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ জঙ্গিমুক্ত, মাদকমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত ও একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ যেন গড়ে ওঠে এবং দেশের মানুষের জীবনে যেন শান্তি-নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় সেটাই আমাদের সব সময় লক্ষ্য রাখতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, অতীতে একটা চমৎকার পরিবেশে সংসদ পরিচালিত হয়েছিল বলেই আমরা মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছিলাম। আবার আমরা যেহেতু সংসদে নির্বাচিত হয়ে এসেছি, অবশ্যই জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব। এটাই আমাদের লক্ষ্য। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আছে। তিনি বলেন, এই সংসদে বাংলাদেশের জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। আজকে সেই সংসদ আপনাকে স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত করেছে এবং ডেপুটি স্পিকার হিসেবে আমাদের ফজলে রাব্বী সাহেবকে নির্বাচিত করেছে। আমি আপনাকে এবং ডেপুটি স্পিকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ একাই জয়ী হয় ২৫৮টিতে। ২২টি আসন নিয়ে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসে জাতীয় পার্টি। দশম জাতীয় সংসদে এই দলটি ৩৪টি আসন নিয়ে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসেছিল। সূত্র: যুগান্তর এমএ/ ১০:২২/ ৩০ জানুয়ারি

from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2MIITRh