ঢাকা, ৩১ জানুয়ারি- দলের সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না করে গত ১০ বছর ধরে মাত্র তিনজনকে দিয়ে এটি পরিচালিত হয়ে আসছে। এ কারণে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে বিরোধ ছড়িয়ে পড়েছে। আইনজীবীদের একটি অংশের দাবি, দ্রুত কাউন্সিলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে হবে। আরেক পক্ষ চাইছে, এই মুহূর্তে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টিই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে মনেযোগ দেওয়ার সুযোগ কম। এ পটভূমিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে দলীয় জ্যেষ্ঠ নেতাদের বৈঠক হওয়ার কথা। সম্ভাব্য এ বৈঠকে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া আরও দ্রুততার সঙ্গে করতে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত হবে। তবে কোনও কোনও আইনজীবী আশঙ্কা করছেন, সম্ভাব্য এ বৈঠকে নেতাদের মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট হতে পারে। আইনজীবী ফোরামের নেতারা জানান, প্রায় ১০ বছর আগে আইনজীবী ফোরামের আংশিক কমিটি হয়। কমিটির সভাপতি হিসেবে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মহাসচিব পদে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও যুগ্ম মহাসচিব পদে অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া আছেন। এরপর আর এই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়নি। মাঝে কয়েকবার নতুন কমিটি করার কথা ফোরামের সদস্যরা তুললেও মাহবুব উদ্দিন খোকন তাতে সাড়া দেননি। এখনও এ ব্যাপারে তার অসম্মতি রয়েছে। বুধবার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, কমিটি তো আছে। এখন তো ম্যাডামের মুক্তির বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। তবে মাহবুব উদ্দিনের সঙ্গে দ্বিমত করেন বিএনপি নেতা ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার। তিনি বলেন, ১০ বছর ধরে ফোরামের কোনও কমিটি নেই। এটার কোনও কাগজপত্রও নেই। আমাদের দাবি নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি হতে হবে। এই ফোরাম আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দিতে হবে। খালেদা জিয়ার বিষয়ে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ম্যাডাম নিজেই তো গণতন্ত্রের জন্য জেলজীবন কাটাচ্ছেন। আর আমাদের কমিটি করতে কেন বাধা আসবে? আমরা চাই গণতন্ত্রচর্চা। বিএনপিপন্থী একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সিদ্ধান্তে আইনজীবী ফোরাম সংস্কারের জন্য একটি প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। সঙ্গে সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জ্যেষ্ঠ কয়েকজন আইনজীবীকে। বিএনপির কোনও কোনও আইনজীবীর ধারণা, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার চাইছেন আহ্বায়ক কমিটি করতে। কিন্তু আইনজীবীরা পরিষ্কার করেই চাইছেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে ফোরামের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করতে। তা না হলে আগামী দিনে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এ বিষয়ে বলেন, বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বৈঠক হবে। আশা করছি, এই বৈঠক থেকেই আমরা সিদ্ধান্তে আসতে পারবো। অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ফোরাম গঠিত না হলে সারাদেশে প্রভাব পড়বে। এই কমিটি মানি না। এটা ভেঙে দিতে হবে। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এটাই মূল এজেন্ডা। বিএনপির আইনজীবীরা বলছেন, গত বছরের ২১ ও ২২ মার্চ আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের সময় পাল্টাপাল্টি প্যানেল হলে ফোরাম পুনর্গঠনের শর্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য জয়নুল আবদীন ও মাহবুব উদ্দিন খোকনকে চূড়ান্ত করা হয়। পরে আর কমিটি গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি তিনজনের প্রলম্বিত কমিটি। বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের দুজন কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বৈঠক করবেন। এরপর আইনজীবীদের সঙ্গে বসবেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। সেখান থেকে একটা সমাধান আসবে বলে আশা করা যায়। এমএ/ ০০:৪৪/ ৩১ জানুয়ারি

from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2TsoZNb