ঢাকা, ০২ ফেব্রুয়ারি- হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করবে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক (নিউইয়র্ক ফেড)। শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকটি। তিন বছর আগের ওই হ্যাকিংয়ে নিউইয়র্ক ফেডে রক্ষিত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গচ্ছিত অর্থের মধ্যে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নেয় হ্যাকাররা। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র সময় বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল ৭টা) নিউইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মামলা দায়ের করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্ক ফেডে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে নেয় হ্যাকাররা। নিউইয়র্ক ফেড থেকে সুইফট কোডের মাধ্যমে চুরি হওয়া অর্থের মধ্যে ২ কোটি ডলার শ্রীলঙ্কায় ও বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার প্রথমে ফিলিপাইনে পাঠানো হয়। ফিলিপাইনে যাওয়া টাকা প্রথমে পৌঁছায় দেশটির রাজধানী ম্যানিলায় অবস্থিত রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) একটি শাখায়। পরে তা আরসিবিসি থেকে চলে যায় ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে। রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার আগেই ২০১৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কা থেকে ২ কোটি ডলার ফেরত আনা হয়। একই বছরের ১২ নভেম্বর ফিলিপাইন থেকে আরও ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার ফেরত আনা হয়েছে। ফিলিপাইনে থাকা বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার ফিরে পেতেই এবার যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের আরসিবিসির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক মামলা করেছে। আর সেই মামলা পরিচালনায় পরামর্শ দিয়ে সহায়তা (টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স) করবে নিউইয়র্ক ফেড। মার্কিন আদালতে মামলা দায়েরের পরদিন এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির একটি চুক্তিও সই হয়েছে। পরে প্রতিষ্ঠান দুইটি এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় যারা জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে সহায়তা করবে নিউইয়র্ক ফেড। নিউইয়র্ক ফেডে রেজ্যুলেশন অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্স বিষয়ে জানাশোনা আছে, এমন একজন রয়টার্সকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য এফিডেভিট প্রস্তুত করবে নিউইয়র্ক ফেড। মামলার শুনানি সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য কর্মীদেরও ছাড় দেবে তারা। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিদের কাছে কর্মীদের সাক্ষাৎকার দেওয়ার সুযোগও দেবে তারা। এর আগে, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলায় আরসিবিসির পাশাপাশি ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং রিজার্ভ চুরির এই টাকা যাদের যাদের কাছে গিয়েছে তাদের আসামি করা হয়েছে। মামলায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থ এবং মামলা পরিচালনা ও এ সংক্রান্ত খরচ চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে আরসিবিসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে বুধবার প্রতিষ্ঠানটি রয়টার্সকে জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ চুরির ঘটনায় মামলা দায়ের করলে তারা স্বাগত জানাবে। কারণ এর মাধ্যমে তারা ফের প্রমাণ করার সুযোগ পাবে যে এ ঘটনার সূত্রপাত বাংলাদেশ থেকেই এবং এর পেছনে জড়িতদের নাম-ঠিকানা জানা যায়নি এখনও। তারা কেবল এ ঘটনার শিকার। সূত্র: সারাবাংলা আর/০৮:১৪/০২ ফেব্রুয়ারি

from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2S0txgZ