ঢাকা, ০২ ফেব্রুয়ারি- অবশেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের মামলা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এ জন্য অভিনন্দন ও ধন্যবাদ। ২০১৬ সালের মে মাসে এ বিষয়ে সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির যে প্রতিবেদন সরকারের কাছে পেশ করা হয়, তার জোরদার উপসংহারই ছিল নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংককে সঙ্গে নিয়ে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে মামলা করা। প্রতিবেদনে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও আইনি বিষয়গুলো সমন্বিতভাবে পর্যালোচনা করে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কেননা, আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রকে চিহ্নিত করে ধরার সামর্থ্য বাংলাদেশের নেই। সুইফট প্রক্রিয়ায় যে গলদ ছিল, তার বিরুদ্ধেও মামলা করে কোনো ফল এনে দিতে পারত না। অন্যদিকে কয়েক বছর আগে মানি লন্ডারিংয়ের জন্য জাতিসংঘ আরোপিত কালো তালিকা থেকে ফিলিপাইনকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়। রিজার্ভ চুরির পরপরই ফিলিপাইনের সিনেট আরসিবিসিকে তিরস্কার করে। সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় আরসিবিসিকে ২০ লাখ ডলার জরিমানা করে। আরসিবিসির সংশ্নিষ্ট মাকাতি শাখার ব্যবস্থাপক মায়া দেগুইতো আগেই তার অপরাধ স্বীকার করেছিলেন এবং রাজসাক্ষী হতে রাজি হয়েছিলেন। সম্প্রতি ম্যানিলার আদালত তাকে ৫৬ বছরের জেল ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন। দায়িত্ব পালনে বিচ্যুতির দায় স্বীকার করে আরসিবিসির মুখ্য নির্বাহী ২০১৬ সালেই পদত্যাগ করেছিলেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এও উল্লেখ ছিল, যুক্তরাষ্ট্রে আরসিবিসির যে সাবসিডিয়ারি আছে, তার ওপর কর্তৃত্ব খাটিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ নিউইয়র্ক বাংলাদেশের ফেরত না পাওয়া অতিরিক্ত প্রায় সাড়ে ৬ কোটি ডলার পাওয়াতে সাহায্য করতে পারে। সুতরাং ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির যে অর্থ আরসিবিসিতে যায় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ও ফেডারেল রিজার্ভ নিউইয়র্কের নো পেমেন্ট বার্তা পাওয়ার পরও অর্থ ছাড় করার অপরাধে আরসিবিসি দোষী সাব্যস্ত হবে বলেই আমার ধারণা। লেখক :বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও রিজার্ভ চুরির ঘটনায় সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান তথ্যসূত্র: সমকাল এমইউ/১০:২০/০২ ফেব্রুয়ারি

from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2TnhV4k